সুশান্ত সিং রাজপুতের পানীয়ে সিবিডি অয়েল নামক এক ড্রাগ মেশানোর অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে। ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে এই তথ্য নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরোর হাতে এসেছে। কিন্তু কী এই সিবিডি অয়েল? গাঁজা বা চরস ছাড়াও বেশ কয়েকটি অন্য মাদকের নাম উঠে এসেছে সুশান্ত সিং রাজপুতের তদন্তে।
সিবিডি হল ক্যানাবিস বা মারিজুয়ানা বা গাঁজা গাছে উপস্থিত একটি রাসায়নিক। গাঁজা গাছে নানা রকমের রাসায়নিক থাকে। তাদের মধ্যে অন্যতম সক্রিয় রাসায়নিক সিবিডি বা ক্যানাবিডায়ল। গাঁজা গাছে মোট ১০০ প্রকার রাসায়নিক থাকে।
গাঁজা গাছে উপস্থিত সবচেয়ে সক্রিয় সাইকোঅ্যাক্টিভ রাসায়নিক হল টিএইচসি (টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনোল)। এই রাসায়নিক নিলে তার প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে দ্রুত ও গভীর হয়। সিবিডির সঙ্গে টিএইচসি-র কিছু মিল থাকলেও, সিবিডির মধ্যে সাইকোঅ্যাক্টিভ প্রভাব নেই। জানা যাচ্ছে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে।
যে মাদকে সাইকোঅ্যাক্টিভ বৈশিষ্ট্য থাকে সেগুলি নিলে মস্তিষ্ক যেভাবে কাজ করে তাতে প্রভাব পড়ে। যেমন মেজাজ, আচরণ, বাস্তব জগতের প্রতি সচেতনতার উপর বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। জানা যায়, এই মাদক নিলে যন্ত্রণা, অ্যাংজাইটি, পারকিনসনস, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার, খিঁচুনি ইত্যাদি থেকে কিছুটা উপশম পাওয়া যায়।
সিবিডি সাধারণত তেল আকারে পাওয়া যায়। তবে সিবিডি অয়েলে সামান্য পরিমাণে টিএইচসি-ও থাকে। তবে আইন অনুযায়ী ০.৩ শতাংশের কম পরিমাণ টিএইচসি থাকে।
সিবিডি নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। তবে এই রাসায়নিকের কিছু উপকারিতাও রয়েছে, এমনও উঠে এসেছে কিছু গবেষণায়।
এছাড়া পিউরিফাইড সিবিডি এপিলেপসি বা মৃগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। তীব্র যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি পেতে সিবিডি সাহায্য করে। তবে এই নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এবার প্রশ্ন হল ভারতে কি সিবিডি বৈধ?
১৯৮৫ সালে নারকোটিকস ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্স অ্যাক্ট বিনোদনমূলক ব্যবহারের জন্য ভারতে ক্যানাবিস বা গাঁজা নিষিদ্ধ। তবে গাঁজা গাছের পাতা ও ফুল ব্যবহার আইনসম্মত। এই পাতা ও ফুল থেকেই ভাং তৈরি হয়। তবে অনুমতি ছাড়া গাঁজা গাছ চাষ করা এখনও ভারতে নিষিদ্ধ।