‘আর.এম.এম.এস টাইটানিক’ ব্রিটিশ যাত্রীবাহি বৃহদাকার এই সামুদ্রিক জাহাজটির সঙ্গে আমরা প্রায় সকলেই পরিচিত। ১৯৯২ সালের ১৩ এপ্রিল সাউথ হ্যাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার পথে বিশাল এক হিমশৈলে ধাক্কা খেয়ে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অতল গভীরে তলিয়ে গিয়েছিল জাহাজটি। তারপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি বছর। কিভাবে ডুবল বিলাস বহুল টাইটানিক তা নিয়েও হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষন, রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে দ্বিমত। তবে সব কিছু অতিক্রম করে আমাদের ধন্যবাদ জানাতে হবে জেমস ক্যামেরনকে। কারন তাঁর জন্যই সিনেমা হলে বসে হাজার,হাজার দর্শক আজও উপলদ্ধি করতে পারেন সেই বিভীষিকাময় রাতের ঘটনা।
তবে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেকেই বিশ্বাস করেন বা মনে করেন যে, শুধুমাত্র একটি হিমশৈল এতোবড় জাহাজের ডুবে যাওয়ার কারণ হতে পারে না। এর পিছনে রয়েছে আরও এক রহস্যময় ইতিহাস। আর যা এখনও অজানা সবার কাছে। আর এই অজানা রহস্যের তথ্য উন্মোচনে আগ্রহী হয়েছেন মিলা জিনকোভা নামের একজন স্বাধীন গবেষক। ১৯৯২ সালের ১৪ এপ্রিল রাতে ঠিক কি হয়েছিল তা পুনর্বিবেচনা করতে চান তিনি। আর সেই উদ্দ্যশেই শুরু হয়েছে টাইটানিক নিয়ে নতুন করে আলোচনা গবেষণা।
জানা গিয়েছে, বিখ্যাত এই সুবিশাল জাহাজটি ডুবে যাওয়ার পিছনে আইস বার্গের পাশাপাশি সোলার আফ্লেয়ার্স গুলিও অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল। বিজ্ঞানীদের মতে এই সোলার আফ্লেয়ার্স বা সৌরশিখা গুলি ঝড়, সূর্যের পৃষ্ঠের তাপের হঠাৎ বৃদ্ধি যা পৃথিবীতে যোগাযোগ এবং উপগ্রহগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে।
জিনকোভার মতে ১৯৯২ সালের ১৪ এপ্রিলের রাতে টাইটানিক যখন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে চলেছিল তার আগে ‘মাসাবা’ নামের একটি জাহাজ থেকে রেডিওর মাধ্যমে সতর্কবার্তা পাঠানো হয় টাইটানিকে। কিন্তু সেই সময় যারা টাইটানিকের রেডিও যোগাযোগের দায়িত্বে ছিলেন তারা সেই বার্তাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করেছিলেন এবং যারফল হিসেবে রাত ২ টো থেকে ২ টো ২০ মিনিটের মধ্যে টাইটানিকের সম্মপূর্ন অংশ তলিয়ে যায় অ্যাটলান্টিকের গভীরে। শুধু তাই নয়, জিনকোভা তাঁর আবহাওয়া সংক্রান্ত একটি জার্নালে জানিয়েছেন, টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সময় আরও একটি জাহাজ সেখান থেকে ১৩ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করেছিল। কিন্তু টাইটানিক থেকে রেডিও বার্তায় তাদের অবস্থান সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ভুল দেওয়ায় শেষ রক্ষা হয়নি। প্রায় ২ ঘন্টা ৪০ মিনিট ধরে ডুবে যাওয়ার এই ঘটনায় অন্তত ১৫,০০ যাত্রী হিমশীতল জলে ডুবে মারা গিয়েছিলেন।
‘মেয়াডাব্লু ডটকমের’ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে জিনকোভা জানিয়েছেন, সেই রাতে উত্তর আটলান্টিকে একটি শক্তিশালী ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের তৈরি হয়েছিল। তবে জিনকোভার এই গবেষণার ফলাফলের অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন যে, এ জাতীয় ঝড়ের সামান্যতম একটি পরিবর্তনও কম্পাসকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। যা ১৯০০ এর দশকের গোড়ার দিকে প্রযুক্তিগত নির্দেশিকার প্রাথমিক উত্স ছিল।